Posts

Showing posts from 2019
Image
  ডায়েরির কোনো এক পাতা     আসিফ মাহমুদ জীবন মা বাড়ি নেই পাক্কা তিন দিন হয়ে গেল । বাবা,ছোটভাই আর মা গ্রামে মামাবাড়ি বেড়াতে গেছে, পরীক্ষার চাপে আমি বাড়ি রয়ে গেছি। বাড়িতে মেয়েমানুষ না থাকলে যে কি সমস্যায় পড়তে হয় এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। ভীষণ খাদ্যসমস্যা ! মা সামান্য রেঁধে রেখে গিয়েছিলেন বটে, কিন্তু তাতে তো ওই দুবেলা টেনে- টুনে চলল, তারপর নিজেরই রেঁধে খেতে হচ্ছে । হোটেলে যে যাব সেই উপায়ও নেই। গত বর্ষায় এক নামিদামি হোটেলে এক পেট খিদে নিয়ে নানরুটির অর্ডার হাকালাম। ওয়েটারের দেরি দেখে আমার আর তর সইল না, নিজেই রান্না ঘরে ঢুকে গেলাম। তার পরের দৃশ্যটা মোটেও সুখকর ছিলো না, একেবারে থিমেটিক দৃশ্য। রাধুনি চাচা উদাস মনে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন, তার এক হাত রুটির কাচা খামিরে আর আরেক হাত উত্থিত লুঙ্গির ভিতরে নির্মমভাবে পশ্চাদ্দেশ চুলকানিতে ব্যস্ত।পাশের   দৃশ্যে দেখা গেল বছর বারোর এক চ্যংড়া ওয়েটার অত্যন্ত মনোযোগের সাথে তার রসে ভরা নাকের ভিতরে খোঁচাচ্ছে , যেন সেই মুহূর্তে নাক খোঁচানোর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ আর নেই। তারপরই সেই হাত দিয়ে সদ্য প্রস্তুতকৃত নানরুটিখানা তুলে আমার টেবিলের দিকে হাটা দিয়েছে। ব
Image
                            গল্পঃ রক্ত ও গোলাপ                                            লেখকঃ আসিফ মাহমুদ জীবন স্কয়ারের নির্জন একপাশ ধরে মাথার উপর ভারী কাপড় জড়িয়ে এলিনা দ্রুত হাঁটছে । এলিনাকে দেখে বোঝা শক্ত যে তার বয়স ত্রিশের কোঠায় । দুপাশে বিনুনি করে চুল বেধে দিলেই চোখে মুখে সদ্য কিশোরিভাব প্রকট হয়ে ওঠে । মস্কোতে শীতকালগুলো বড্ড বেশি ঠান্ডা হয় , গৃহস্থ বাড়িতে চিমনির আগুনের পাশে বসে বাড়ির ছেলেপুলে আর বুড়োরা গল্প জুড়ে দেয় । সেন্ট স্কয়ারের চৌহদ্দি পেরিয়ে আবাসিক অঞ্চলের দিকে দ্রুত পা বাড়ালো এলিনা । তার গায়ে ট্রাকসুটের উপর পশমওয়ালা সুয়েটার , গত শীতে কিনে রেখেছিল , এখন কাজ দিচ্ছে । প্রচন্ড শীতে এলিনার মুখ বরফের মতো সাদা হয়ে আছে , সাদা মুখে লালচে লালচে ছোপ , চোখের দৃষ্টি পাগলের মতো উদ্ভ্রান্ত । মাত্র ঘন্টা তিনেকের ব্যবধানে সাজানো গোছানো জীবনে এমন সাইমুম হানা দেবে তা সে কখনো কল্পনাও করেনি । জুরালিনা ভবনের পাশ দিয়ে নোংরা একখানা শুড়িখানায় ঢুকল এলিনা । বারের দিকে যেতে গিয়েও থমকে দাঁড়ালো সে , না ! ভদকা - মদ কিছুই ছোঁয়া চলবে না । দরকার হলে আগুনের পাশে
Image
বিষয়ঃ আবরার ফাহাদ হত্যা লেখকঃ আসিফ মাহমুদ জীবন সকাল থেকেই মা আস্থিরভাবে এঘর ওঘর ছোটাছুটি করছে। মাঝে মাঝে আমার কাছে এসে নিচুস্বরে জিজ্ঞাসা করছে, “ছেলেটাকে কি সত্যি পিটিয়ে মেরেছে?”। আমি প্রত্যেকবার মাথানিচু করে সায় দিচ্ছি। এ দেশে এর চেয়ে বেশি কথা বলার অধিকার আমার নেই। আবরার হত্যার গল্প আমার অশীতিপর নানির কানেও পৌছেছে। তিনি সারাদিন আমার ঘরে বসে আমার গায়ে হাত বোলাচ্ছেন আর বলছেন, “ নানাভাই রে, তুই ওইসব ফেসবুক-টেসবুকে কি সব লিখিস! আর লিখিস নে রে, তোরও মেরে ফেলবে।” আমি শুনছি আর হাসছি, আমি কি লিখব! বেড়াল হয়ে বাঘের গর্জন করা কি শো ভা পায়! একদমই না! আমি বাঙ্গালির চেতনায় বড় হওয়া বাঙালি, আমার মুখেও কি এসব মানায়! উহু, আমি চুপ করেই থাকব। মা-নানির মিছিমিছি কি সব অদ্ভূত চিন্তা! সাগর-রনি, তকী, তনু, বিশ্বজিৎ, নুসরাত...এরপর লিস্টের নতুন সংযোজন আবরার। লিস্ট যখন আছে, বড় তো হবেই। বাংলার সব সূর্যসন্তানদের ঠাই হবে সে লিস্টে। তারপর একদিন সে লিস্টে কাগজের অভাব পড়বে, সেদিন হয়ত নাম লেখার জায়গাটুকু পাবো না। কি করেছিলো আবরার? ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিল? ভারতবিরোধী পোস্ট? কেন! কেন এমন পোস্ট দেবে! এ দেশে জন্মেছে, এ দে
Image
কবিতাঃ ভালোবাসা যদি আসিফ মাহমুদ জীবন আচ্ছা প্রিয়? ভালোবাসা যদি শার্টের বোতামে এঁটে দেয়া যেতো! তবে কি প্রতি ক্লান্ত সন্ধ্যায় বুক পকেটের কাঠগোলাপ ছুঁয়ে বলতে, ভালবাসি? আচ্ছা প্রিয়ন? ভালোবাসা যদি চুলের ক্লিপে সেটে দেয়া যেতো! তবে কি বকুল ঘ্রাণের মুগ্ধস্বরে বলতে, ভালবাসি? আচ্ছা প্রিয়ংবদ? ভালোবাসা যদি চিঠির ভাজে লুকিয়ে দেয়া যেতো! তবে কি জানলার ধারে চিঠিখানা মেলে বলতে, ভালোবাসি? আচ্ছা প্রিয়তমেষু? ভালোবাসা যদি জোছনার রঙে মিলিয়ে দেয়া যেতো! তবে কি হন্টণ শেষে মিষ্টি হেসে বলতে, ভালোবাসি? আচ্ছা অনিমেষ? ভালোবাসা যদি কাজলদানীর জলে ঢেকে দেয়া যেতো! তবে কি কাজল কালো চোখে চোখ রেখে বলতে, ভালোবাসি? আচ্ছা অনিন্দ্য? ভালোবাসা যদি কপালের বাঁকা টিপে লাগিয়ে দেয়া যেতো! তবে কি টিপখানা সোজা করে স্নিগ্ধ চাহনিতে বলতে, ভালোবাসি? আচ্ছা আরণ্যক? ভালোবাসা যদি লালপেড়ে শাড়ির রঙে রাঙিয়ে দেয়া যেতো! তবে কি ঘাসের শিশির মুঠোয় এনে বলতে, ভালবাসি? আচ্ছা অহক? ভালোবাসা যদি ভোরের সূর্যে আঁকিয়ে দেয়া যেতো! তবে কি প্রদোষের লালচে আলোয় বলতে,ভালোবাসি? আচ্ছা প্রিয়? ভালোবাসা যদি সত্যিই মিথ্যা না হতো! তবে কি আমায় ভালোবে
Image
কবিতাঃ   আজ থেকে আমি বড্ড ব্যস্ত হয়ে যাব আসিফ মাহমুদ জীবন কোজাগরীর চাঁদ সবে বান ডেকেছে তেঁতুল বনে আজ জোছনার মেলা তবু, আজ থেকে আমি বড্ড ব্যস্ত হয়ে যাব। বৃষ্টির ফোঁটায় আজ প্রেমের ছটা মাদকতায় ভরা তৃষ্ণার্ত অঙ্গ সত্যি বলছি, আজ থেকে আমি বড্ড ব্যস্ত হয়ে যাব। হিমাংশুবৎ প্রিয়তমার কপোল পান্ডুর এলোকেশী ভেজা চুলে ঝরে পড়া জল তাতে কি? আমি আজ থেকে বড্ড ব্যস্ত হয়ে যাব। তিলোত্তমার বীণায় আজ সুর উঠেছে, অনুষ্ণ সে সুরে ছোটে কামনার একাঘ্নী বলেছি তো, আজ থেকে আমি বড্ড ব্যস্ত হয়ে যাব। ওষধিনাথের টানে আজ উত্তাল ঔর্বাম্বু শান্ত সলিলাধার আজ কুন্থনে মুখর দ্বিধা হই, আজ থেকে আমি বড্ড ব্যস্ত হয়ে যাব। জীমূতমন্দ্রের হটাৎ বাকে আজ দিগ্বধূর আগমন তার নিক্কণ গ্রীবার নিক্বতে আমার কান নেই কারণ, আজ থেকে আমি বড্ড ব্যস্ত হয়ে যাব। পদ্মিনীবল্লভ আজ আবির রঙে রাঙা পয়ূদন্ত আমি তাই ভীষণ দিশেহারা তারপরও, আজ থেকে আমি বড্ড ব্যস্ত হয়ে যাব। পাথরে আজ ফুল ফুটেছে মহীরুহ খোঁজে ভালোবাসা ব্যস্ত থাকার ভান করে করে তাইতো বলছি, আজ থেকে আমি বড্ড ব্যস্ত হয়ে যাব।             
Image
 বিষয়ঃ  একজন বইপোকার স্বীকারোক্তি লেখকঃ আসিফ মাহমুদ জীবন  ছোটবেলাতে খুব ভোরে গানের শব্দে আমার ঘুম ভাঙত। নানা কোথা থেকে যেন একখানা রেডিও কিনে এনেছিলেন। প্রতিদিন সকালে বেতারের সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লাইলা, অরুণ চ্যাটার্জি, সুবীর নন্দীর গানে মনপ্রাণ ভরে থাকত। এক একজনের গলা আমার কাছে অতিপরিচিত’র মতো লাগতো। গানের তখন কিই বা বুঝি, দু আঙুলের আঙ্গুলের বাচ্চা আমি তখন! কিন্তু গানের সুরগুলোর অদৃশ্য এক সুতো ছিলো, সে সুতোয় শিশুবয়সেই আমি আটকা পড়েছিলাম। রেডিওখানা টিউন করে বাজিয়ে মামা রোয়াকে বসে শেভ করতেন আর গুনগুণ করে গান গাইতেন। আমি মাঝে মাঝে চিরুনিটাকে ক্ষুর কল্পনা করে মামার পাশে বসে আমার কচি মুখের কল্পিত দাড়ির বংশ নির্বংশ করতাম। গ্রাম ছেড়ে যবে কংক্রিটের শহর আমার নতুন আবাস হলো,এক অদৃশ্য সুর আমার বুকে খুব বেজেছিলো। শিশু আমি সে সুরের নাম দিতে পারিনি, বেদনার সুরের নাম দিতে নেই, বেদনার সুরের রঙ যে নীল হয়! কিন্তু কথায় যে আছে, ‘ মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়’। শুধু বদলায় না, ক্ষণে ক্ষণে বদলায়, কারণে অকারণে বদলায়। আমিও বদলে গেলাম, খুব দ্রুতই বদলে গেলাম। আমার বুকে তখন আর সেই
Image
বিষয়ঃ বাবার গান লেখকঃ আসিফ মাহমুদ জীবন  ( ভিডিও দেয়া হবে অতি শীঘ্রি) আমার বাবা মাঝে মাঝেই অদ্ভুত সব কাজকর্ম করেন। সেসব দেখে মাঝে মাঝে আমি চুপচাপ থেকে হাই তোলার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত আর নির্লিপ্ত থাকতে পারি না। এই তো কদিন আগেকার ঘটনা। বাবার হটাত করে খেয়াল হল তার ভূড়ি নামছে। একেবারে গোলগাল পটবেলি যাকে বলে ঠিক তা নয়, নোয়াপতি ভূড়ি বলা চলে। এমন ভূড়ি দেখতেই মন ভালো হয়ে যাবার কথা, পেট শুরু হতেই ছোটখাট সাইজের টিলার মতো, দেখলেই মনে হয় টিপে দেই । প্রায় পয়তাল্লিশঊর্ধ্ব একজন মানুষের ভুড়ি নামাটা খুব একটা ভাবনার বিষয় না, আমার তো ১৮ তে পৌছানোর আগেই নেমে গেছে। কিন্তু বাবা ভাবনায় পড়ে গেলেন। সপ্তাহভর নানরুটি আর শিক কাবাব খেতে খেতে তিনি প্লান করলেন যে খুব ভোরে তাকে হাটতে বের হতে হবে, রাতে রুটি খেতে হবে, গ্রিন টি খেতে হবে, তবেই মুক্তি। প্লান মোতাবেক সেদিন রাতে খাসির মাংস দিয়ে দু প্লেট ভাত সাবড়ানোর পর তিনি ৬-৭ খানা রুটি খেয়ে মৃদু হেসে ভূড়িতে হাত বোলাতে লাগলেন, এবার দেখা যাবে ভূড়ি বাবাজি কি করে বাড়ে! পরদিন সকালে তাকে টেনে তোলা হল। বাবা বুক ডন দেয়া শুরু করলেন এবং প্রকান্ড ভূড়ির বদৌলতে অনতিবিলম
Image
 গল্পঃ  অন্ধ মশাল লেখকঃ  আসিফ মাহমুদ জীবন জয়তীর যখন জ্ঞান ফিরলো তখন চারপাশে বেশ ভীড় জমেছে। কড়ই গাছের তলায় প্রায় এক গ্রামের লোক জড়ো হয়েছে। মাথা তুলতে গিয়েই সমস্ত শরীর অসহ্য যন্ত্রণায় শিউরে উঠল জয়তীর। রক্ত রঞ্জিত বাম হাতখানা সামান্য তুলে নিজেকে স্পর্শ করতে গিয়েই চমকে উঠল সে। সম্পূর্ণ বিবস্ত্র দেহের উপর এক প্রস্থ কাপড় কোনোমতে ঢেকে দেয়া। যন্ত্রণায় ডুকরে উঠল জয়তী, গত রাতের সব দুঃসহ স্মৃতি এক এক করে মনে পড়ছে তার। হাজার চেষ্টা করে ওসব শকুনদের কাছ থেকে নিজের সদ্য প্রস্ফুটিত কুমারিত্বের গন্ধ আড়ালে রাখতে পারেনি সে। চারপাশে জমা লোকের ঢল ক্রমশ ঘন হচ্ছে, এদিক ওদিক থেকে শোনা যাচ্ছে ফিসফাস আর ছি ছি রব। ম্রিয়মাণ ভীড়ে হটাত সামান্য চঞ্চলতার আভাস দেখা গেলো। ভীড় ঠেলে ফিরোজ আর আহসান মাস্টার দৌড়ে এলেন। ফিরোজ দ্রুত গিয়ে জয়তীকে কোলে তুলে নিলো, আহসান মাস্টার স্থাণু হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন, নিজের মেয়ের এ বিধ্বস্ত রূপ তিনি চিনতে পারেননি। কড়ই গাছতলার ভীড় ফিকে হয়ে যাচ্ছে, শুধু গাছতলার নিচে কালচে হয়ে যাওয়া রক্তের ছোপ এক কালিময় কলংকের জানান দিচ্ছে। ফিরোজ দৌড়াচ্ছে, দৌড়াচ্ছেন আহসান মাস্টার, তার দুগাল বেয়ে বইছে বাঁধভ
Image
বিষয়ঃ নস্টালজিক স্কুলজীবন লেখকঃ  আসিফ মাহমুদ জীবন কলেজে উঠার পর থেকে হাইস্কুলের দিকে খুব একটা পা বাড়ানো হয়না। মাঝেমধ্যে স্কুলে দু একবার ঢু মারা অতীব প্রয়োজন কারণ বাম হাত উপর্যুপরি চুলকালেও বৃত্তির শেষ কিস্তির টাকাটা এখনো পর্যন্ত হাতে এসে পৌঁছায়নি। অথচ টাকার বড়ই প্রয়োজন। নিখিলদার কাছে ধারে গল্পের বই নিয়েছিলাম, টাকাটা দেবো দেবো করেও দেয়া হচ্ছে না। এখন তো এমন অবস্থা হয়েছে যে কলেজে গেলেও আমাকে আধামাইল উল্টো রাস্তা মাড়িয়ে যেতে হয় যাতে নিখিলদার সামনে না পড়ি। চায়ের দোকানের খরচার খাতায়ও বেশ জমা হয়েছে। আজকাল চা খেতে গেলেই দোকানদার চাচাও পাশের সাইনবোর্ডের দিকে ইশারা করে। সেখানে লাল কালিতে বড় বড় করে লেখা, “আজ নগদ , কাল বাকি”। সাইন বোর্ডের নিচে কে যেনো অপটু হস্তে লাল মার্কার দিয়ে লিখেছে,” চা খাবেন? ঢেলে দেই?” আমি হাতের লাল মার্কারখানা দ্রুত পকেটস্থ করলাম। চা দোকানদার ফের ইশারা করছে,আমি সে ইশারা অগ্রাহ্য করে মোটামুটি বেশ বড় পেল্লাই সাইজের হাই তুলে চায়ের কাপ তুলে নিই, আমার হাতে পৌঁছে দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এদিকে প্রেয়সীর পিছনে বেশ টাকা খরচ হচ্ছে, হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু বাপের পকেট ফাঁকা করে এভ
Image
গল্পঃ বৈশ্বানল লেখকঃ  আসিফ মাহমুদ জীবন বাসুমতি গ্রামের উত্তর কোণের পলেস্তারা খসা আলিশান বাড়িতে তখনও সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বালানো হয়নি। যোগেন ঠাকুর সন্ধ্যাহ্নিকের জন্য সবে বাইরের উঠোনে পা রেখেছেন। তুলসিতলায় পৌছাতে না পৌছাতেই বাইরের দরজায় কারো গলাখাকারি শোনা গেলো। যোগেন ঠাকুর হন্তদন্ত করে দরজা খুলেই দেখলেন বাইরে ঠাকুজ্জে মহাশয় গম্ভীর মুখে দাঁড়িয়ে আছেন। যোগেন ঠাকুর ভক্তি সহকারে তাকে ভিতরে এনে চেয়ার পেতে দিলেন, যদিও ঠাকুজ্জ মহাশয়ের বসার কোন লক্ষণ দেখা গেলো না। যোগেন ঠাকুর অবাক হয়েছে বটে, এমন অসময়ে ঠাকুজ্জে আগে কখনো তার বাটীতে এসে হাজির হয়নি। ঠাকুজ্জে মহাশয় তখনো দাঁড়িয়ে আছেন, তুলসিতলার দিকে তাকিয়ে প্রথম মুখ খুললেন। “ অ্যা!! এখনো প্রদীপ দাওনি! ঘরে ধুনো দেবে কখন শুনি? এ কি অনাচার পড়ল বাপু!” কঙ্কন রানী ঘোমটা দিয়ে দ্রুত প্রদীপ জ্বালালেন। যোগেন ঠাকুর লজ্জায় মাথা নত করে আছে। গ্রামের সকলে তাকে খাটি ব্রাহ্মণ বলে চেনে। পুজোয় কখনো তাকে ক্ষণকাল পার হওয়ার পরে আসতে দেখেনি। আর আজ কিনা ঠাকুজ্জে এসেই!! আনমনে জিভ কাটলো যোগেন। “ বিশ্বমিত্র কই! ডাকো দেখি ছোকরাকে। জ্ঞান ভান্ডার কেমন বাড়ছে একট