সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার মূল সূচনা হয় পরিবার থেকে। এই প্রক্রিয়ার মূল প্রভাব টা পড়ে শিশুদের উপর। স্বাভাবিকভাবেই শিশুদের বিচার বুদ্ধি আর বোধ কম থাকে। বাবা মায়ের আচরণ মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের অজান্তেই শিশুদের উপর পড়ে, সে ভাল হোক কি খারাপ। পুরো বিষয়টা একটা ছোট্ট ঘটনার মাধ্যমে প্রকাশ করা যায়।আসগর আলি, একেবারে দিলখোলা মানুষ। কিন্তু সমস্যা একটাই, রেগে গেলে বউকে আচ্ছামত ঠ্যাঙ্গায় সে।ঠেঙানোর কিছুক্ষণ বাদে চুলের মুঠি ধরে ঘরের বাইরে বের করে দিয়ে বলে – বের হারামজাদী। আসগর আলির ছেলের বয়স ২ বছর হল। আদ আদ করে কেবল কথা বলা শিখছে। যে সময়টার কথা বলা হচ্ছে তখন ধান কাটার মৌসুম। প্রচুর ধান কেনা বেচা হচ্ছে। আদম বেপারি এমনিতেই ঝামেলায় আছে। কয়েক গ্রাম পরের মনসুর বেপারি নাকি ভাল দাম দেয়ায় সেইদিকেই লোকজন বেশি যাচ্ছে। সকাল থেকেই তাই মাথা গরম আসগর বেপারির। সেই সময় তার বউ খবর নিয়ে এলো তার ছেলেকে গত আধাঘণ্টা ধরে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। এমনটা আগেও হয়েছে, সেবার ছেলে বিকেলে বাড়ি ফিরেছিল লজেঞ্ছ চুষতে চুষতে। আসগর আলি রেগে গিয়ে বউর চুলের মুঠি ধরে দিলো টান, তারপর লোকজনের সামনেই পিঠে দমাদম কিল মারতে লাগল। মানুষজন কাছেও আসতে পারছে না, মনিবের রাগ তাদের জানা। কেই বা দু টাকার অন্ন হারাতে চায়। পুরোটা সময় আসগর আলির মুখে ওই একটাই কথা- বেরো হারামজাদী। এদিক আসগর আলির বউ মার খেয়ে এমনভাবে চলে গেল যেন কিছুই হয়নি। এমন পরিস্থিতি যে তার সাথে প্রায়ই হয় টা বেশ বোঝা গেল। এদিকে ধান ভরতি ট্র্যাক্টর চলে গেল। অন্যদিকে সন্ধ্যা হবার পরও আসগর আলির ছেলেকে পাওয়া গেল না। আসগর আলি আরেক দফা বউকে পিটালেন এই বলে যে সে নাকি তার ছাওয়ালের উপর নজর রাখে নি বলেই আজ এ অবস্থা।মারের সময় তার চিরাচরিত কথা বেরো হারামজাদী তো ছিলই। রাত হয়ে গেল, আসগর আলি সারা গ্রাম বুক থাবড়ে বেরাচ্ছে, কিন্তু ছেলেকে পাচ্ছে না। অন্য এক স্থানে এক অভিনব দৃশ্য দেখা গেল। সেই ট্র্যাক্টর এর পিছনেই ধানের গাদার মধ্যে আসগর আলির ছেলে ধানের শীষ চিবুচ্ছে। অন্যদের দেখতেই সে লজ্জিত কণ্ঠে বলে উঠল- বেলো হালামদাদি।
একটি সংক্ষিপ্ত মৃত্যু আসিফ মাহমুদ জীবন অন্ধকারে ঠাসা বদ্ধ দেয়ালদুটোর মধ্যে টলতে টলতে মুখ থুবড়ে পড়ে গেল সে, বেরোবার আর কোনো পথ নেই! অবশ্য পথ থেকেও লাভ নেই, বুকের পাজড়ের ভিতরে হাতুড়ি পেটানোর মতো ধুক ধুক শব্দটা বলে দিচ্ছে বিষ ইতিমধ্যেই হৃদপিণ্ডে পৌছে গেছে। হৃদপিণ্ড থেকে এই বিষ ধমনী শিরা আর কৈশিকজালিকা ছাড়িয়ে পৌছে যাবে প্রতিটি কোষ থেকে কোষান্তরে। হঠাত মুখ থেকে এক খাবলা রক্ত উঠে এলো, এ রক্ত নিশ্চিত মৃত্যুর সংকেত! নিজের রক্ত দেখে নিজেই চি চি করে হেসে উঠল সে, বদ্ধ উন্মাদের হাসি। বাবার মুখটা কি স্পষ্ট মনে আছে তার? কিংবা রান্নাঘরে প্রেমিকার সাথে হওয়া শেষ চুম্বন? সেকেন্ডের শেষ কাটার সাথে প্রতিটি স্মৃতি চোখের সামনে এসে ঘুরছে। ছোটবেলায় মায়ের সাথে রান্নাঘরের লুকোচুরি খেলা,কৈশরে বন্ধুদের সাথে কৌশলে ফাঁদ এড়িয়ে যাবার প্রতিযোগিতা, বিস্কুট খেতে দেখে প্রেমে পড়া প্রেয়সীর মুখ,যৌবনের উত্তেজনায় কেটে যাওয়া সেসব রাত, যমজ সন্তানদের নিষ্পাপ চেহারা, প্রতিটি স্মৃতি এখন সোনার চেয়েও মূল্যবান। তার দেহ নিস্তেজ হয়ে আস
Comments
Post a Comment