গল্পঃ আতঙ্কের_অতীত

লেখকঃ আসিফ মাহমুদ জীবন


দ্বিতীয় পর্ব

জামাল ভয়ার্ত চোখে ছোট্ট পার্সেলটার দিকে তাকিয়ে আছে, এটার সাথে যে চিঠি এসেছে তাকে ভয়ানকই বলা চলে। তার চেয়ে ভয়ানক ব্যাপার হল পার্সেল থেকে গন্ধ বের হচ্ছে। চিঠিটা আরেকবার হাতে নিয়ে পড়লেন জামাল। চিঠির কাগজটা খুব সুন্দর, চারদিকে আবার নকশা করা, এমন চিঠিতে প্রেমপত্রই মানায়। কিন্তু চিঠিতে প্রেমস্পদ কথা নেই, বেশ সাদামাটা ভাষায় কিছু কথা আছে।
প্রিয় পুলিশ ভ্রাতাগণ,
শুভেচ্ছা নিবেন। আমি জানি আমাকে পাকড়াও করার জন্য আপনারা রাতের ঘুম হারাম করে ফেলেছেন। আপনাদের এই দুরবস্থা দেখে আমি সত্যিই চিন্তিত। আমাকে ধরা আপনাদের পক্ষে অসম্ভব, তবু দয়া তো দেখানো যায়ই। জ্যাক দ্যা রিপারও দয়া দেখিয়েছিলেন, সেখানে আমি আপনাদের সামান্য দয়া না দেখালে সেটা অন্যায়ের পর্যায়ে পড়ে। আপনাদের জন্য আমার এই সামান্য উপহার, আশা করি খুশি হবেন।
ইতি
আপনি জানেন না আমি কে, কিন্তু আপনি জানেন আমি কি
জামাল ঘামছেন, তার খুব পানি পিপাসা পাচ্ছে কিন্তু কাউকে ডাকার শক্তি পাচ্ছেন না। সেই সময় তার ফোন বেজে উঠল, সাইমুম ফোন করেছে। তিনি বহু কষ্টে ফোন ধরলেন। অপর পাশ থেকে সাইমুমের উত্তেজিত গলা শোনা গেল।
“ জামাল, এক্ষুনি ফরেন্সিক লাবে চলে আয়। হ্যালো? জামাল?”
জামাল শব্দ করতে পারছে না, তার দৃষ্টি কাঠের পার্সেলটার দিকে। সাইমুম ক্রমাগত জামালকে ডেকে যাচ্ছে, জামাল নিশ্চুপ। অনেক্ষন পর জামালের কণ্ঠ শোনা গেল।
“ তুই একটু থানায় আসতে পারবি? একটু ঝামেলা হয়েছে।“ জামালের কণ্ঠ শুনেই সাইমুম বুঝল কিছু একটা হয়েছে, গাড়ি ঘুরিয়ে রউনা দিলো থানার দিকে।

সাইমুম চিঠিটা হাতে নিয়ে নিমগ্ন হয়ে আছে। এত সাবলীলভাবে কেউ এত ভয়ঙ্কর ভাষা লিখতে পারে এটা তার জানা ছিল না। পার্সেলটার থেকে বেশ দুর্গন্ধ বের হচ্ছে, জামাল নাকে রুমাল চেপে বসে আছে, তাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে সে অসুস্থ। পার্সেলটাতে কি থাকতে পারে তা ইতোমধ্যে নিশ্চিত হয়ে গেছে সাইমুম। তবু সে পার্সেলটা খুলল এবং খোলার সাথে সাথে দুটো ঘটনা ঘটল।ভিতর থেকে ভক করে একটা দুর্গন্ধ বের হয়ে আসলো আর জামাল পুরো টেবিল ভাসিয়ে বমি করে ফেলল। পার্সেলের ভিতরে রয়েছে মানুষের একটা অর্ধগলিত কিডনি।

ডঃ ইয়াসমিন পার্সেলটা নিয়ে ল্যাবের ভিতরে গেছেন। সাইমুম জামালকে বাড়ি চলে যেতে বলেছিল, দায়িত্ববোধের কারণে জামাল যায়নি। সাইমুম একটা ব্যাপারে এখন নিশ্চিত, খুনটা কোন ডোম করেনি, খুন করেছে আরও অভিজ্ঞ কেউ। একটা ডোমের পক্ষে এত সুন্দরভাবে চিঠি লেখা সম্ভব নয়। আরেকটা চিন্তা মাথায় আসছে, খুনি যদি একজন না হয়। সেই সময় ডঃ ইয়াসমিন এসে সাইমুমকে ভিতরে নিয়ে গেলেন, জামাল ভিতরে আসতে চাইলেও সাইমুম আসতে দিলো না, বেচারা এমনিতেই বেশ অসুস্থ।
“ হ্যাঁ, সাইমুম সাহেব। কিডনিটা দ্বিতীয় ভিকটিমেরই।“
“ এমনটাই ধারণা করেছিলাম। আচ্ছা, কি জন্য ডেকে পাঠিয়েছিলেন হটাত করে?”
ডঃ ইয়াসমিনকে একটু ইতস্তত বোধ করতে দেখা গেল,” না, আসলে আমার মাথায় একটা চিন্তা এসেছিল, এটাকে আপনি পাগলামিও বলতে পারেন।“
“ আপনি নির্ভয়ে বলুন”
“ আপনার নিশ্চয় মনে আছে যে আপনাকে আমি বলেছিলাম খুনি অ্যানাটমি এক্সপার্ট?”
“ জি, আমি প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করেছিলাম একটা ডোম হতে পারে, আফটার অল, এই পেশার লোকদেরই এদিকে যাতায়াত বেশি” নিজের নতুন সিদ্ধান্তটা বেমালুম চেপে গেলো সাইমুম।
“ না, মিঃ সাইমুম। আমার ধারণাও তাই ছিল। কিন্তু এখন দেখি তা নয়।“
“ আপনি কি বোঝাতে চাইছেন?” আগ্রহের সাথে বলল সাইমুম, ডঃ ইয়াসমিনের ভিতরে চাপা উত্তেজনা তার চোখ এড়ায় নি ।
ডেডবডির চাদর তুলে ফেললেন ডঃ ইয়াসমিন। সাইমুমের আবার অস্বস্তি শুরু হল। পুরো দেহজুড়ে সেলাই থাকার কারণে আরও বিশ্রী দেখাচ্ছে।
“ চোখ বন্ধ না করে ভাল করে দেখুন।“ ডঃ ইয়াসমিনের কথায় সামান্য লজ্জা পেল সাইমুম, বয়সে সে কিছুটা বড়ই হবে ইয়াসমিনের থেকে।
“ ভাল করে কলারবোনের নিচের কাটাটা দেখুন, পারফেক্ট অ্যানাটমি কাট। কিন্তু সেটা ডোমরাও পারে। মূল ব্যাপারটা হল কাটার টাইপটা। ভি আকৃতিতে কেটেছে কিন্তু অতি সুক্ষভাবে, সুক্ষ ছুরি দিয়ে। সেটা আবার চেস্ট কাটে মিলেছে।এমনভাবে কাটা যে সুক্ষ সেলাইয়ে সহজেই মিলিয়ে যাবে। আমার দেশে পড়াশোনার বিষয় ছিল ফরেন্সিক, স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছি আমি পর্যন্ত এমন সুক্ষভাবে কাটতে পারব না। এমন সুক্ষভাবে কাটতে পারে একমাত্র সেই সার্জন যিনি বিদেশ থেকে এর উপর পি এইচ ডি করে এসেছেন। একটা ডোম তো নিশ্চয় বিদেশ থেকে পি এইচ ডি করে আসবে না, কি বলেন সাইমুম চৌধুরী?” শেষ কথাটা ব্যাঙ্গের স্বরেই বললেন ডঃ ইয়াসমিন।
সাইমুম নিশ্চুপ, একটু আগে তার ধারণা এখন পাকাপোক্ত হল। ডঃ ইয়াসমিনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বাসায় চলে আসলো সাইমুম, সামনে তার অনেক কাজ বাকি।

একটানা তিন ঘণ্টা ইন্টারনেটে ঘুরাঘুরি করল সাইমুম। কেসের মূল সুত্র সে পেয়ে গেছে, শুধু তাই নয়, একজন সন্দেহভাজন পর্যন্ত তার তালিকায় এসেছে। পরের দিন ব্রিফিং এ তাকে এ ব্যাপারে জানাতে হবে।সরকারের চাপে পড়ে পুলিশ থেকে ছয় সদস্যের একটা তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। এর ভিতরে সাইমুম আর জামালের কাজ ফিল্ডে দৌড়াদৌড়ি করা, কেস সলভ করা। আর বাকি চার জনের দায়িত্ব হল এই দুজন ফিল্ড অফিসারের ব্রিফিং শোনার ভান করা, তাড়াতাড়ি কেস সলভ করার তাগাদা দেয়া আর কেস সলভ হলে নিজেরা ক্রেডিট নিয়ে প্রেস ব্রিফিং এ ইস্ত্রি করা শার্টের নিচে ভুঁড়ি লুকিয়ে পুলিশের সুনাম করা। কম্পিউটার রেখে স্টাডি রুমে বসল সাইমুম। তার মাথাই একটা চিন্তাই ঘুরছে। হোক একটা মানুষ পিশাচশ্রেণীর, তবুও এমনভাবে খুন করতে ব্যাক্তিগত আক্রোশ থাকা প্রয়োজন। কিন্তু কয়েকটা পতিতার সাথে একজন সার্জনের কি ব্যাক্তিগত আক্রোশ থাকতে পারে? এমনটা নয়তো যে আক্রোশটা সমগ্র নারীজাতির প্রতি? নারীদেহের প্রতি একজন মানুষের এতটা বিরুপ ধারণা কখন হতে পারে। অতীতের কোন আতংকের স্মৃতি থাকলে?হটাত চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো সাইমুম, তার কেন জানি মনে হচ্ছে সে সমাধানের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে।

শাহারিয়ার খান ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নিচ্ছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজে সদ্য জয়েন করেছেন তিনি। লম্বা, সুদর্শন হওয়ায় তাকে দেখে অনেক ছাত্রীর মনেই আজকাল কোকিল ডাকতে শুরু করেছে। গুজব শোনা যাচ্ছে ব্যাচের সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ে তপস্বী তাকে প্রেম নিবেদন করেছিল, তিনি আমলে নেননি। সম্প্রতি ভার্সিটির ছাত্রলীগের সভাপতির সাথে তার মনমালিন্যের কথা শোনা যাচ্ছে। জাহিদুর রহমান, ছাত্রদলের সভাপতি, জোর গলায় দাবি করছেন শাহরিয়ার খানের এইচ এস সি সার্টিফিকেট ভুয়া, যদিও শাহারিয়ার খানকে এ ব্যাপারে খুব একটা গুরুত্ব দিতে দেখা যাচ্ছে না।
ব্রিফিং চলছে। সাইমুম প্রোজেক্টরের পর্দায় তার এ কয়দিনের কেস স্টাডি বর্ণনা করছে। জামাল একদৃষ্টিতে প্রোজেক্টরের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে। আই জি আব্দুল করিম আলুর চপ দিয়ে ছোলা-মুড়ি খাচ্ছেন, মাঝে মাঝে ভালোভাবে স্বাদ আস্বাদনের জন্য চোখ বন্ধ করছেন। তাকে দেখে বাকি তিনজনও সামনে খাবার নিয়ে বসেছে। আই জি আব্দুল করিম মাঝে মাঝে চোখ সরু করে মাথা নাড়াচ্ছেন, এমন ভাব যেন তিনি বিষয়টা পুরোপুরি বুঝেছেন। জামাল মৃদুস্বরে আইজিকে একটা গাল দিলো, আব্দুল করিম শুনতে পেলেন না, তিনি তখন চোখ বন্ধ করে ছোলা চিবুচ্ছেন।
“ স্যার, যেমনটা বলছিলাম। খুনটাতে ধরনটাই প্রধান বিষয়। ঠিক একইভাবে খুন প্রথমবার নয়, এর আগেও হয়েছে।“
“ আগেও হয়েছে!” আঁতকে উঠল জামাল। আব্দুল করিম বিরক্ত চোখ তার দিকে তাকালেন, তিনি একগ্রাস মুখে তুলতেই যাচ্ছিলেন, জামাল ছোকরাটা সব কাজে বাঁধা দেয়!
“ হ্যাঁ, আগেও। ৮ মার্চ, ২০১৩। আজ থেকে বছর ছয়েক আগে। নারায়ণগঞ্জে রেবেকা পারভিন নামে এক মহিলা খুন হন। এখানে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল, খুনের পদ্ধতিতে একচুল তফাৎ নেই। এমন হতে পারে যে খুনি একজনই। ৬ জানুয়ারি, ২০১৮, টেক্সাসে অবিকল ভাবে মিসেস মরিসন খুন হন। টেক্সাস ইউনিভার্সিটির পাশেই তার বাড়ি ছিল।“
আব্দুল করিম একটু বিরক্ত হলেন, দেশ সামলানো যাচ্ছে না, এ ছেলে বিদেশ নিয়ে পড়ে আছে, হোমোসাইড ডিপার্টমেন্ট আজকাল গাধা নিয়োগ দিচ্ছে নাকি!
“ এবার আসি সন্দেহভাজন এর তালিকায়। রেবেকা পারভিনকে খুন করেছিলেন তার স্বামী, তিনি এখন পাবনা মানসিক হাসপাতালে আছেন, তার চিকিৎসা চলছে বলে হাসপাতাল দাবি করেছে।“
“ মেন্টাল হাসপাতাল? সে…?”
“ পুরোটা শোনো জামাল। রেবেকা পারভিনের স্বামীর নাম আব্দুল করিম, আগেই বলেছি তিনি এখন পাগল।“ সাইমুমের কথা শুনে আইজিপি আব্দুল করিম প্রায় শোয়া অবস্থা থেকে উঠে বসলেন,তার নামের সাথে কাকতালিওভাবে মিল থাকলেও তাকে স্পষ্টতই অপমান করা হয়েছে। জামাল অন্যদিকে তাকিয়ে আছে, ব্যাটার গা কাপছে, ব্যাটা নির্ঘাত হাসছে।
“ তো রেবেকা পারভিন, আব্দুল করিম আর আব্দুল করিমের ছোটভাই আব্দুল জালাল ওই বাড়িতে থাকতেন। বাড়ির ভিতরেই রেবেকা পারভিনের লাশ পাওয়া যায়, পাশে রক্তরঞ্জিত অবস্থায় আব্দুল করিম প্রলাপ বকছিলেন। পুলিশ আব্দুল করিমের বিরুদ্ধে মামলা করে চার্জশিট তৈরি করে এবং মানসিক বিপর্যস্ততার কারণে তাকে হসপিটালে স্থানান্তর করা হয়।আব্দুল জালালের কিন্তু কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।“
“ তো তুমি বলতে চাচ্ছ করিম বাইরে বের হয়ে দুটো খুন করে সোনাবাবু সেজে আবার ভিতরে ঢুকে গেছে?” ভ্রূ নাচিয়ে বললেন আইজিপি আব্দুল করিম, অপমানের শোধ তিনি দু প্রস্থ ধমক দিয়ে নেবেন বলে ভাবছেন।
“ অনেকটা সেরকম স্যার। আমি হাসপাতালে ফোন দিয়েছিলাম, কর্তৃপক্ষ বলল, আব্দুল করিম হাস্পাতালেই আছে।কিন্তু…”
“ ওই তো” সাইমুমের মুখের কথা কেড়ে নিলেন আইজিপি “ তাহলে আব্দুল করিম ম্যাজিক করেছিল?”
আইজিপির কথা শুনে বাকি তিনজন দাঁত কেলিয়ে হাসতে শুরু করল, তীব্র হাসিতে একজনের গলায় খাবার বেঁধে গেলো , ফলশ্রুতিতে সারা কামরায় হাসি-কাশি অবস্থা চলতে লাগল।
“ স্যার, পাবনা জেলায় আমাদের একজন ইনফরমার আছে। সে খবর দিয়েছিল, গত সপ্তাহে হাসপাতালের সিকিউরিটি ক্র্যাক করে চারজন রোগী পলিয়েছিল। আজ কর্তৃপক্ষ সবাইকে ধরেছে। এদের মধ্যে একজন যদি আব্দুল করিম হয়, তবে এমনটা হতেও পারে।“
“ তোমার ইনফরমার তোমাকে এ খবর দেয়নি যে তাদের মধ্যে আব্দুল করিম ছিল কি না?”নীরস মুখে প্রশ্ন করলেন আইজিপি।
“ না স্যার, সেজন্য আমাদেরকে যেতে হবে।“
“ তো এতক্ষণ বসে বসে করছ কি, মুড়ি ভাজছ? এক্ষুনি টিম রেডি করে যাও।“ খেকিয়ে উঠলেন আইজিপি। সাইমুমের বলতে ইচ্ছে হল, না, মুড়ি ভাজছি না, মুড়ি গেলা দেখছি। সাইমুম বলল না, অনেক কাজ বাকি পড়ে আছে।
হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলছে সাইমুম, কর্তৃপক্ষ সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে রোগী পালানোর বিষয়টা ধামাচাপা দেয়ার।
“ যে যে কয়েদি পালিয়েছিল, তাদের সবাইকে ধরেছেন?” জামাল রাগতস্বরে জিজ্ঞাসা করল।
“ দেখুন, আমাদের নিরাপত্তা যথেষ্ট ছিল, কেউ পালায় নি।“ হসপিটালের সুপারিন্টেনডেন্ট কাচুমাচু হয়ে একথা বলতে শুনে জামালের ইচ্ছা হল কষিয়ে একখানা থাবড়া দিতে। আজকাল সবাইকে তার থাবড়া দিতে ইচ্ছা করে, না জানি কবে নাম হয়ে যাবে থাবড়া জামাল!
“ এবার যদি না বলিস তাহলে কিন্তু তোরে ডাইরেক্ট থানায় নিয়ে পাকিস্তানি ডলা দেব, পাকিস্তানি ডলা চিনিস?“ জামালের এবারের হুমকিতে কাজ হল, গর্তের কেঁচো বেরিয়ে আসলো।
“ স্যার, সেদিন দারোয়ান ঘুমিয়ে পড়েছিল, ওই সেলের…”
“ দারোয়ান জাহান্নামে যাক, আব্দুল করিম আছে কিনা তাই বল।“ জামালকে উত্তেজিত হতে দেখে সাইমুম তাকে সতর্ক করল।
“ জি স্যার”
সাইমুম কৌতূহলী হয়ে জিজ্ঞাসা করল,” ওই চার রোগীর মধ্যে আব্দুল করিম ছিল?”
সুপারিন্টেনডেন্ট মাথা নিচু করে বলল, “ জি স্যার।“ জামালের চোখ উত্তেজনায় চকচক করে উঠল,” একে ধরলে কিভাবে?”
“ স্যার, আমাদের লোকেরা ওকে ধরে এনেছিল। শুনলাম, ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে বসে ভিক্ষা করছিল।“
জামাল একগাল হাসি নিয়ে সাইমুমের দিক ফিরে তাকাল,” সাইমুম, কেস সলভড”
সাইমুম কেন জানি খুশি হতে পারছে না, কোথাও একটা ঘাপলা আছে। ঘাপলাটা খুজে বের করতে হতে। না হলে হয়ত একজন নিরপরাধ মানুষ দ্বিতীয়বারের মতো অকারণে সাজা পাবে।
ঠিক সেই সময় সাব- ইন্সপেক্টর রুবেলকে চিৎকার করতে করতে দৌড়ে আসতে দেখা গেলো,
“ স্যার! সর্বনাশ হয়ে গেছে।“
( চলবে)
( আগামি পর্বে সমাপ্তি)
                                 

Comments

Popular posts from this blog