লেখকঃ আসিফ মাহমুদ জীবন

লেখকের সাথে আমার পরিচয় হয়েছিলো ‘বহুব্রীহি’ তে। ‘বাকের ভাইয়ের’ মতো গলায় চেইন ঝুলিয়ে টঙের দোকানে সিগারেট টানার চেষ্টা কম করিনি। কিন্তু হিমুর সাথে পরিচয়ের পর জীবনে আসলো বৈরাগ্য আর নগ্ন পায়ে হন্টণ অভ্যাস। রুপাকে খোঁজার জন্য মরিয়া প্রায় আমি শেষে দেখা পেলাম মিসির আলির। মোটা পুরু চশমার আড়ালে বুদ্ধিদীপ্ত চোখের ঝিলিক ভুলবার নয়। ‘দেয়ালে’ যখন পিঠ ঠেকে গেছে তখন ‘কবি’র মতো মুক্ত বিহঙ্গ হতে চেয়েছি। জানি, আজও ‘মৃন্ময়ীর মন ভালো নেই’। থাকবে কি করে, আপনি যে নেই। আজ ‘সবাই গেছে বনে’ , চারপাশে ‘কোথাও কেউ নেই’। আর আপনি ‘মাতাল হাওয়ায়’ বসে শুভ্র এর সাথে দুলে দুলে ‘জল জোছনা’ দেখছেন। নুহাশ পল্লীতে আজ সবাই জড়ো হয়েছিলো। রুপার হাতে ছিলো রাধাচূড়া ফুল, নিলার হাতে কৃষ্ণচূড়া। লীলাবতীর হাতের কদম ফুলের মালাটা সেদিন কারো দৃষ্টির বাইরে যায়নি। মিসির আলি একা একা বিড়বিড় করছিলেন, আজও তিনি বৃদ্ধই আছেন, ঠিক যেমনটা রেখে গিয়েছিলেন। কেউ কাদেনি, কাদবেই বা কেন? আপনি তো আছেনই, ঠিক যেমনটা ছিলেন, প্রত্যেক বইপ্রেমীর হৃদয়ে ‘জোছনা ও জননীর গল্পের’ মতো। মৃত্যুর মতো তুচ্ছ বিষয় আপনাকে ম্লান করতে পারেনি। তাইতো বড্ড বলতে ইচ্ছা হয়, হুমায়ুন সাহেব, আমার পাশে বসে গায়ে জোছনা মাখবেন? ‘হিমুর নীল জোছনা’?
চিরস্মরণীয়-হুমায়ুন আহমেদ( ১৩ নভেম্বর, ১৯৪৮- ১৯ জুলাই,২০১২)

                                     

Comments

Popular posts from this blog